ঢাকা | এপ্রিল ২৭, ২০২৪ - ৪:৫৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

বরখাস্তের পর সোনালী লাইফের সিইও রাশেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

  • আপডেট: Monday, January 22, 2024 - 10:53 am
  • পঠিত হয়েছে: 108 বার

টাচ নিউজ ডেস্ক: আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমসহ সর্বত্র আলোচনায় বীমা প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সদ্য বহিষ্কৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানের নাম। ইতোমধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে তার ও তার দুর্নীতির সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ মোস্তফা গোলাম এমরান বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে মীর রাশেদ বিন আমান’সহ কোম্পানির সাবেক সাত কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্থ আত্মসাৎসহ হুমকি প্রদানের অপরাধে পেনাল কোড ১৮৬০ এবং দন্ডবিধির ৪০৮/৪২০/৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয় (মামলা নং-৪ তারিখ ১১/০১/২০২৪)। এই মামলায় ইতোমধ্যে রাশেদ’সহ সাত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই সাত আসামি হলেন- মীর রাশেদ বিন আমান, সোনালী লাইফের সাবেক এইচআর অফিসার ফাতেমা তামান্না সুইটি, হিসাব বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সুমি শেন, সাবেক হেড অব পারচেজ রাজেশ আইস, সাবেক হেড অব ফাইন্যান্স মো. বোরহান উদ্দিন মজুমদার, হিসাব বিভাগের সাবেক ম্যানেজার মো. শিপন ভূঁইয়া ও সাবেক হেড অব ইনভেস্টমেন্ট সুজন তালুকদার। তবে কোম্পানির আভ্যন্তরীণ প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আপাতত ৯ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করা হলেও মীর রাশেদের আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ বিপুল। তার দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সোনালী লাইফের পক্ষ থেকে একটি আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির তদন্তে রাশেদের বিরুদ্ধে সোনালী লাইফের ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে কোম্পানির একটি বিশ্বস্ত সূত্র। সূত্রের দাবি, রাশেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে কোম্পানিটি। যদিও শুরু থেকেই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন মীর রাশেদ বিন আমান। উল্টো নিজের অপরাধ ঢাকতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে কোম্পানির চেয়ারম্যান’সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের।
এদিকে, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে রাশেদের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। পাওয়া গেছে একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও। ফাঁস হয়েছে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে গোপনে কোম্পানির সাবেক কর্মী ফাতেমা তামান্না সুইটিকে বিয়ের তথ্য। সূত্র জানায়, আভ্যন্তরীণ তদন্ত চলাকালে মীর রাশেদের দফতরে পাওয়া গেছে সই জালিয়াতি করা অসংখ্য ব্ল্যাংক চেক। যেগুলোর মাধ্যমে কোম্পানির তহবিল থেকে আরও বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। কোম্পানি থেকে পাওয়া মাসে সাড়ে চার লাখ টাকা বেতনের বাইরে আয়ের আর কোনো উৎস না থাকলেও তিনি ব্যবহার করেন একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। দ্বিতীয় স্ত্রী সুইটিকে ঢাকায় কিনে দিয়েছেন বিলাসী ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি। এমনকি অর্থপাচারের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় চারটি অ্যার্পাটমেন্ট ও মার্সিডিজ জি ওয়াগন-২০২১ মডেলের দামি গাড়ি কিনেছেন বলেও অভিযোগ আছে।
অপরদিকে, কোম্পানির পক্ষ থেকে নিয়োগ করা তৃতীয় পক্ষের তদন্ত এবং রাশেদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রাহক বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ এড়াতে পদত্যাগ করেছেন সোনালী লাইফের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস। গত ১৮ জানুয়ারি পরিচালনা পর্ষদের সভায় চেয়ারম্যান পদত্যাগ পত্র জমা দেন বলে কোম্পানির বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।