ঢাকা | মে ১, ২০২৪ - ১:০৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

সরকার বিরোধী কার্যক্রমে জড়িত প্রবাসী ব্যাক্তি ও সংগঠনের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে

  • আপডেট: Friday, April 5, 2024 - 1:12 pm
  • পঠিত হয়েছে: 70 বার

টাচ নিউজ ডেস্ক: বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার ও বিষোদ্গার করে, তাদের তালিকা তৈরির করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সম্প্রীতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই দিনের সরকারি সফরের শেষ দিন আবুধাবির একটি হোটেলে আরব আমিরাতপ্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনায় মন্ত্রী তথ্য জানান। সরকার তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর বলেও তিনি জানান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও সংস্থা অপতৎপরতা করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউব বা ফেসবুক ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে অপপ্রচার ও গুজব চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অধিকংশ যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের সন্তান ও বংশধর, বরখাস্ত কিছু সেনা কর্মকর্তা, পলাতক বিএনপি নেতা, কিছু পলাতক সাংবাদিক যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বসে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা, দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে অপপ্রচারমূলক ভিডিও প্রচার করছে।

এই ব্যক্তিরা যে বিদেশের মাটিতে বসে দেশ ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত, তার অসংখ্য প্রমাণ এরই মধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এসে পৌঁছেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এসব ব্যাক্তি, সংস্থা ও এদের পৃষ্টপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

জানুয়ারির নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা ও সরকারকে আন্তর্জান্তিক স্বীকৃতি না দিতে বিদেশে বসে কাজ করে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি চক্র । এর মধ্যে ডেমোক্রেসি ওয়ার্কিং গ্রপ নামের যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি সংগঠন অন্যতম।
বর্তমান সরকারে যেন সমর্থন না দেয় এবং সরকারের কোন উন্নয়ন সহযোগিতায় না করে তার জন্য এই সংগঠনটি ইতিমধ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এর এমপিদেরকে এবং ব্রিটিশ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া সংগঠনটি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টও ৭ জানুয়ারী নির্বাচন গণতান্ত্রিক একতরফা নির্বাচন হিসাবে চিন্তিত করা এবং এই সরকার এ সীকৃতি না দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন।
এছাড়া সংগঠনটি তাদের ওয়েবসাইটে নির্বাচন ও সরকারের কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন লিখে থাকেন । যদিও ডেমোক্রেসি ওয়ার্কিং গ্রুপ দাবি করে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংযুক্ত নয়, একটি রিসার্চ ভিত্তিক অর্গানিজশ। কিন্তু বিদেশে বসে তারা কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করতেছে তা তাদের কার্যক্রম থেকে বুঝা যায়। এসব সংগঠনের কাযক্রম বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে । সাম্প্রতিক ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গত সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ইউরোপিয়ান সংসদের কিছু এম পি জাতিসংঘ শান্তি মিশন থেকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে বাদ দেয়ার আবেদন করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে কিছু লোক ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ খুলে নানা ধরনের ভিডিও প্রচার করছেন। এ সবের অধিকাংশই অপপ্রচারমূলক। সমাজে ও রাষ্ট্রে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এসব ভিডিও-অডিও প্রচার বন্ধ না করা গেলে সামাজিক অবক্ষয় আগের তুলনায় আরো বাড়তে পারে এবং দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।’ জিনাত হুদা বলেন, ‘রাজনৈতিক সরকারের বিরুদ্ধে যে কেউ যেকোনো ধরনের সমালোচনা করতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে কেউ যদি সমালোচনার স্থলে মিথ্যাচার করে, গুজব ছড়ায়, অপপ্রচার কমর, সেখানেই সমস্যা। দেখা যাচ্ছে, এসব ব্যক্তি নিজ নামে চ্যানেল বা পেজ খুলে সরকার ও সরকারি দল এবং ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে নানা ধরনের কুত্সা ও গুজব রটাচ্ছে। যারা রটাচ্ছে তারা সবাই বাংলাদেশি। কখনো কখনো মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও মিথ্যাচার করে। কিছু ভিডিওতে তো দেখা গেছে, একজন নিজেকে রাজাকার বা রাজাকারের সন্তান হিসেবে দাবি করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা আমরা দেখতে পাইনি। ফলে এর মাধ্যমে কিন্তু সমাজে একটা বার্তা যায় যে আপনি যা খুশি তা-ই বলতে পারবেন, যা খুশি তা-ই করতে পারবেন, আপনার কিছুই হবে না! প্রকৃতপক্ষে এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’