ঢাকা | ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ - ৬:০১ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনছে যুক্তরাষ্ট্র

  • আপডেট: Thursday, September 5, 2024 - 9:46 am
  • পঠিত হয়েছে: 83 বার

টাচ নিউজ: বাইডেন প্রশাসন বুধবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন প্রভাবিত করার ব্যাপক প্রচেষ্টার অভিযোগ এনেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাব ফেলার লক্ষ্যে রাশিয়ার ‘ভুয়া তথ্য প্রচার’ ঘিরে ফৌজদারি মামলা, ইন্টারনেট ডোমেইন আটক এবং নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনেরাল মেরিক গারল্যান্ড বলেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো নেয়া হচ্ছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ব্যবহার করে অসাবধান আমেরিকান ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য এবং প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর প্রচেষ্টার পটভূমিতে।

পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় চ্যানেল আরটির (রাশিয়া টুডে) শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা। আরটিকে আগে ‘বিদেশী অ্যাজেন্ট’ হিসেবে রেজিস্টার করতে হয়েছিল এবং তাদের ওপর ভিসা সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

একটি ফৌজদারি মামলায় আরটির দুইজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি-ভিত্তিক একটি কন্টেন্ট তৈরির কোম্পানিকে রুশ প্রোপাগান্ডামূলক দুই হাজার ভিডিও প্রকাশ করার জন্য গোপনে অর্থায়ন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্ত দুইজন ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে এবং কোম্পানিটি জানতো না তাদের রাশিয়া ব্যবহার করছে।

অন্য আরেকটি পদক্ষেপে, কর্মকর্তারা ৩২টি ইন্টারনেট ডোমেইন দখল করার ঘোষণা দেয় যে ডোমেইনগুলো ব্যবহার করে ক্রেমলিন রুশ প্রোপাগান্ডা ছড়ায় এবং ইউক্রেনের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থন দুর্বল করে।

কোন কোন বিদেশী সরকার আমেরিকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল করার জন্য কত দূর যেতে পারে, সেটার ওপর আজকের ঘোষণা আলোকপাত করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলে। কিন্তু এই বিদেশী সরকারদের বোঝা উচিত যে, আমার মুক্ত এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য বিদেশী শক্তির অপ্রয়াস আমরা সহ্য করবো না।

নভেম্বরের নির্বাচনে প্রভাব
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অতীতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য সম্প্রচারের মাধ্যমে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ এনেছিল। তবে গারল্যান্ডের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের গভীরতা প্রকাশ করছে এবং যারা এ কাজে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের বার্তা আছে।

গত মাসে এক ভাষণে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনেরাল লিসা মনাকো বলেন, ‘রাশিয়াই নির্বাচনের প্রতি মূল হুমকি, যদিও ইরান গত গ্রীষ্মে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা টিম হ্যাক করে এবং তৎকালীন বাইডেন-কমালা হ্যারিস প্রচারণা শিবিরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার মিত্ররা তাদের হস্তক্ষেপ করার কাজে ক্রমশ আধুনিক কৌশল ব্যবহার করছে। তারা প্রেসিডেন্সিয়াল এবং কংগ্রেস নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার জন্য নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভোটারদের টার্গেট করছে। তারা সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে অসতর্ক আমেরিকানদের কব্জা করে রাশিয়ার স্বার্থ এগিয়ে নেয়ার ন্যারেটিভ প্রচার করেন।’

রাশিয়া নিয়ে বেশিরভাগ উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে নভেম্বরের নির্বাচন প্রভাবিত করার জন্য সাইবার আক্রমণ এবং ভুয়া তথ্য প্রচার। কৌশলগুলোর মধ্যে আছে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া আরটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী বার্তা এবং কন্টেন্ট প্রচার, ভুয়া ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই দাবিগুলো আরো জোরদার করা এবং সেগুলো আমেরিকার অনলাইন জগতে ঢুকিয়ে দেয়া।

সাধারণত, এই নেটওয়ার্কগুলো বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে, যেমন অভিবাসন, আইনশৃঙ্খলা অথবা গাজায় যুদ্ধ। অনেক ক্ষেত্রে, আমেরিকানরা বুঝতেই পারে না যে কন্টেন্ট তারা অনলাইনে দেখছেন সেগুলো হয় ক্রেমলিন থেকে এসেছে না হয় তারা প্রচার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ক্রেমলিনের সাথে সম্পৃক্ত গ্রুপগুলো রাশিয়ার ভেতরে বিভিন্ন বিপণন এবং যোগাযোগ কোম্পানিকে ডিজিটাল প্রোপাগান্ডা তৈরির কাজ দিচ্ছে এবং একইসাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা ঢেকে রাখার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।

আমেরিকানরা যাতে রাশিয়ার ভুয়া তথ্য, সেটা কোথা থেকে এলো তা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে ছড়িয়ে দেয়, সেটাই হচ্ছে তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য।

কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষ যদি বিশ্বাস করে তথ্য দেশের ভেতর থেকে এসেছে, তাহলে তার ওপর আস্থা রেখে সেটা শেয়ার করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ চ্যানেলের আদলে ভুয়া ওয়েবসাইট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল তৈরি হচ্ছে সেরকম দু’টি পথ।

রাশিয়ার দূতাবাসে বার্তা দেয়ার পর তাৎক্ষনিক কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।