বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনে ফোরম্যানের জালিয়াতির অভিযোগ
টাচ নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক হেলপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ফোরম্যান হয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এসব জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যানের কাছে গত ৯ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগটি করেছেন বিএসএফআইসি কেন্দ্রীয় কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর সাবেক সভাপতি মো. আবু বিন মোস্তানজিদ।
উক্ত অভিযোগে বলা হয়েছে,
মোঃ খোরশেদ আলম, জাল সার্টিফিকেট দিয়ে বিএসএফআইসি’র দৈনিক মজুরী ভিত্তিক হেলপার এখন সিনিয়র ইলেকট্রিকাল ফোরম্যান।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সদর দপ্তরে মোঃ খোরশেদ আলম কে অবৈধভাবে দৈনিক মঞ্জুরী ভিত্তিক অস্থায়ী ইলেকট্রিক্যাল হেলপার নিয়োগ দেওয়া হয় এবং স্বজন প্রীতির মাধ্যমে তাহাকে ১৯৯৭ সালে ইলেকট্রিশিয়ান এবং ২০০২ সালে সিনিয়র ইলেকট্রিশিয়ান, ফোরম্যান, সিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ফোরম্যান পদে পদন্নতি দেওয়া হয়। উল্লেখ্য চিনি শিল্প ভবনটি প্রজেক্ট বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করানো হয়। প্রজেক্ট বিল্ডার্স নামের প্রতিষ্ঠানটিই চিনিশিল্প ভবনের ইলেকট্রিক্যাল, সেনেটারি কাজসহ যাবতীয় কায্যক্রম সম্পন্ন করিয়া কমপ্লিট ভবন সংস্থার নিকট হস্তান্তর করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০০৬ সালে কাজী আমিনুল ইসলাম সংস্থার চেয়ারম্যান থাকা কালে জনাব খোরশেদ আলমকে উক্ত ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সফলতা দেখাইয়া স্বজ প্রীতির মাধ্যমে দুইটি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করেন যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ। আরো উল্লেখ্য যে, একই বছরে অনুমোদিত সেট-আপ বর্হিভূতভাবে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলে ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে তাহাকে অবৈধ ভাবে ফোরম্যান হিসাবে পদন্নতি নেওয়া হয়। উল্লেখ্য ঢাকা শহরের যে সকল সংস্থার নিজস্ব ভবন আছে সে সব সংস্থার সেট আপে ফোরম্যান/সি। ফোরম্যানের কোন পদ নাই। প্রত্যেক ভবনের সুপার ভাইজার/ইন্সপেক্টর/কেয়ারটেকার পদ আছে, উক্ত পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা অব্যশক। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন, চিনি শিল্প ভবন রক্ষনা বেক্ষন এবং আইটি শাখা লোকবল না থাকাতে কাজ চালাইয়া যাওয়ার জন্য ২০-০৯-২০১১ইং তারিখে ১৯৬৯তম বোর্ড সিধান্তে তথ্য গবেষনা প্রযুক্তি ও চিনিশিল্প ভবন রক্ষনা রক্ষণ সেলে শিক্ষাগত যোগ্যতা অভিজ্ঞতা ও সরকারী নিয়ম কানুন মেনে লোক নিয়োগ ও শূন্যপদ পূরন করার স্বিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের কর্মচারী চাকুরী প্রবিধানমালা ১৯৮৯ এবং প্রবিধানমালা ১৯৮৯ এর ৩২(১) ধারাকে ও কর্পোরেশনের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুসরন না করে জনাব খোরশেদ আলমকে অবৈধভাবে সিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ফোরম্যান হিসেবে পদন্নতি ও একই সঙ্গে দুইটি বিশেষ বেতন বৃদ্ধি সুবিধা দেওয়া হইয়াছে। উল্লেখ্য সদর দপ্তরের অনুমোদিত সেট-আপে (এনাম কমিশন) ফোরম্যান/সিনিয়র ফোরম্যান এর কোন পদ নাই। কিন্তু পদন্নতি দিয়ে লোক বসানো হইয়াছে অথচ চিনিকল গুলোতে সেট-আপে ফোরম্যানের পদ আছে কিন্তু লোক নাই। যেখানে কর্মচারীরা কর্পোরেশনের সিবিএ ইউনিয়নে(ট্রেড ইউনিয়ন) প্রতিনিধিত্ব করার কথা সেখানে সিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ফোরম্যান পদটি কারখানা আইনের আওতায় মিল কারখার অন্তর্ভুক্ত কর্মকর্তার পদ মর্যাদা ও স্কেলভুক্ত বিধায় এ পদধারী ব্যাক্তি শ্রমিক কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার রাখেনা। উল্লেখ্য যে, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের এই বিষয়ে একটি আদেশ রয়েছে। (কপি সংযুক্ত)। অতিব দুঃখের সহিত জানাইতেছি যে, কর্পোরেশনের দৈনিক ভিত্তিক কিছু ছেলে মেয়ে চাকুরি করিতেছেন, তাহাদের নিকট হইতে জনাব খোরশেদ আলম চাকুরী দেওয়ার সময় এক দফা টাকা গ্রহন করেছেন এবং স্থায়ী করনের জন্য সংস্থার চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রনালয়ের কথা বলে হয় দফা টাকা নেয়া হয়েছে। যাহা দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা করিলে সত্যতা পাওয়া যাবে। বিশেষ ভাবে আরও উল্লেখ্য যে, বর্তমানে চিনি শিল্প ভবনের আতংক স্বঘোষিত সিবিএ সভাপতি জনাব খোরশেদ আলম। খোরশেদ আলম কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছেন এবং এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই এবং একজন বিশেষ দলীয় নেতার প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন বিভিন্ন অপকর্ম এবং পরবর্তীতে বন্ধ মিল গুলির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বরে, কালোবাজারেচিনি বিক্রয়, বিভিন্ন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
1. বিভিন্ন মিল হইতে সদর দপ্তরে বদলী, বিভিন্ন চিনিকল প্রতিষ্ঠানের জন্য-বিক্রয়, এবং জমি লিজ প্রদানের টেন্ডার গুলি এপ্রয় করেন। বর্তমানে খোরশেদ আলম অবৈধভাবে উপার্জন করে চলমান প্রায় ২০/২২ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন । এই সিন্ডিকেটের অপকর্মের কথা কেউ মুখে আনলেই কারো চাকুরী গিয়েছে কাহাকেও হেড অফিস থেকে মিলে বদলি হতে হয়েছে ।সিন্ডিকেটের প্রভাব খাটিয়ে খোরশেদ আলম কিছুদিন থেকে কর্পোরেশনের প্রশাসন শাখা ও সংস্থাপন শাখা হইতে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাক্তিগত ফাইল অবৈধ ভাবে নিয়ে যায়। ফাইল নিয়ে গিয়ে স্কুল সার্টিফিকেট সহ বিভিন্ন কাগজপত্রা ঘাটিয়ে কিছু ত্রুটি বের করে সংস্থার চেয়ারম্যান বরাবর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চাকুরি খাওয়ার আবেদন করে চাপ সৃষ্টি করে ‘ইতিমধ্যে ৮/৯ জন কর্মচারীর চাকুরী খেয়েছে এবং কয়েকজনকে পাইপ লাইনে রেখেছেন। এখানে আমার বক্তব্য খোরশেদ আলম অন্যের স্কুল সার্টিফিকেট/অন্যান্য কাগজ পত্র খোজেন। কিন্তু তাহার স্কুল সার্টিফিকেট জাল নিজের তৈরী করা (প্রान আছে)। খোরশেদ আলম চিনি শিল্প কর্পোরেশনে শিক্ষাগত যোগ্যতার যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুল ওয়াহিদ, মোবাইল-০১৩০৯১০৬০১৩, বিদ্যালয়ের নাম দারোরা দিনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, পোঃ দারোরা, উপজেলাঃ মুরাদনগর, জেলাঃ কুমিল্লা। কে ফোনের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করিলেই জানিতে পারিবেন খোরশেদ আলম উল্লেখিত স্কুলে লেখাপড়া করেছিলেন কি না? বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, একাধিক সূত্র দাবী করেছেন যে, পূর্বরাগ হোটেলের প্রাক্তন ম্যানেজার মহোদয়ের স্বাক্ষরে ০৬/১১/০৯৮৯ তারিখে সূত্র নং পূর্বরাগ পার্টটাইম/৪৬/৮৯/৩৩০ পত্রদ্বারা চিনিশিল্প কর্পোরেশনকে খোরশেদ আলম ও আব্দুল খালেকের জীবন বৃত্তান্তসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। পরবর্তীতে খোরশেদ আলম ২৯/০৪/১৯৯০ইং তারিখে একটি আবেদন পত্র জমা দেন । ঐ আবেদনের প্রেক্ষিতে চিনিশিল্প কর্পোরেশন সাক্ষাৎকার গ্রহন পূর্বক খোরশেদ আলমকে অস্থায়ী ভিত্তিতে ইলেকট্রিক্যাল সাহায্যকারী হিসেবে চাকুরী দেন। বর্তমানে খোরশেদ আলমের ব্যাক্তিগত নথিতে পূর্বের কোন কাগজপত্র নাই। খোরশেদ আলম নিজেই চুরি করেছেন কারন পূর্বরাগ সেলের মাধ্যমে চিনিশিল্পকে দেয়া কাগজপত্র অনুযায়ী খোরশেদ আলম অবসরে যাওয়ার কথা এবং পূর্বের কাগজ পত্রে তাহার শিক্ষাগত যোগ্যতা ৩/৪র্থ শ্রেনী দেখানো হইয়াছে।
অতএব, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারী তথা দেশের একজন সাধারণ নাগরীক হিসেবে আপনার সমীপে আকুল আবেদন এই যে, উপরের উল্লেখিত বর্ণনার আলোকে জনাব খোরশেদ আলম জাল/নিজের তৈরী স্কুল সার্টিফিকেট দিয়ে অবৈধভাবে দৈনীক মজুরী ভিত্তিক অস্থায়ী চাকুরী নেন, পরবর্তীতে স্থায়ী হন, পরপর চারটি পদন্নতি, একই সঙ্গে দুইটি বিশেষ বেতন বৃদ্ধি ও সিন্ডিকেট তৈরী করে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া সহ যাবতীয় বিষয় গুলো তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন এবং দুর্নীতির কারনে ধ্বংস প্রায় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন তথা দেশের চিনি শিল্পকে রক্ষার নিমিত্তে জনাব খোরশেদ আলম সিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ফোরম্যান সহ ৮/১০ জন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের অপকর্ম ও অপতৎপরতা রোধ কল্পে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হইল।
এ ব্যাপারে খোরশেদ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এব্যাপারে মামলা হয়েছে মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় আছেন। তদন্তাধীন অবস্থায় আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।