ঢাকা | জুন ২০, ২০২৫ - ৮:৫৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম

নরসিংদীর রায়পুরায় ভূমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে ডিজিটাল নামজারির জালিয়াতি—আইন, শৃঙ্খলা ও মালিকানা নিরাপত্তার মারাত্মক হুমকি

  • আপডেট: Friday, June 20, 2025 - 2:58 pm
  • পঠিত হয়েছে: 2 বার

নরসিংদী প্রতিনিধি:নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হোসেননগর মৌজায় বৈধভাবে নামজারিকৃত জমির ওপর সংঘবদ্ধ একটি দুর্নীতিবাজ চক্র দ্বিতীয়বার অবৈধ ডিজিটাল নামজারি করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সৈয়দ আমজাদ হোসাইন। তার দাবি, এই জালিয়াতির পেছনে রয়েছে স্থানীয় ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং কুখ্যাত ভূমিদস্যু আব্দুল লতিফ মিয়া।

সৈয়দ আমজাদ হোসাইন ২০২০ সালে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হোসেননগর মৌজার (জে.এল. নং: ১১৯, আর.এস. খতিয়ান: ২৭৭১, দাগ: ১৩৪৫৩ ও ১৩৭৮১) ৩৭ শতক জমির নামজারি সম্পন্ন করেন এবং সেই থেকে নিয়মিত খাজনা প্রদানসহ জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ করে আসছিলেন।

কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, আব্দুল লতিফ মিয়া (পিতা: মৃত রমজান আলী মিয়া), যিনি এলাকায় একাধিক প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পরিচিত, আবেদন নং: ১১৬৮৪০৮৯ ব্যবহার করে ওই জমির ওপর অবৈধভাবে দ্বিতীয়বার ডিজিটাল নামজারি করিয়ে নেন। চমকপ্রদভাবে, তিনি তার আবেদনে ২২টি দাগ উল্লেখ করলেও, অনুমোদন দেওয়া হয় কেবল ভুক্তভোগীর দুইটি দাগেই—যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতারণার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে:
রায়পুরা উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি)।হোসেননগর মৌজার দায়িত্বপ্রাপ্ত কানুনগো।

পাড়াতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল বাসেদ ভূঁইয়া।
ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, “আমার বৈধ ডিজিটাল নামজারি থাকার পরও যারা দ্বিতীয়বার নামজারি অনুমোদন করেছে, তারা দায়িত্বে থেকেও আইন ভেঙে দুর্নীতি করেছে। এটা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির বিষয় না, এটা পুরো ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”

অভিযোগ আরও জানায়, আব্দুল লতিফ প্রায় ১৫ বছর আগে মোঃ হযরত আলী নামের এক ব্যক্তির কাছে এই জমি বিক্রি করে হস্তান্তর করেন, কিন্তু পরে নাবালক ভাইবোনদের অজুহাতে দলিল না করে এখন জমির মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ফের দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সৈয়দ আমজাদ হোসাইন বলেছেন, তিনি একাধিকবার ভূমি অফিসে অভিযোগ করেও কোনো বিচার পাননি, বরং কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে ঘুষ দাবি করেন এবং হুমকিস্বরূপ বলেন, “উপর মহলের নির্দেশে হয়েছে”।

ভুক্তভোগীর দাবি: ১. অবৈধ নামজারি অনুমোদনে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ,
২. পূর্বের বৈধ নামজারি বহাল রেখে জালিয়াতির মাধ্যমে করা নামজারি বাতিল।
৩. জমি দখলের চেষ্টাকারী চক্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ।

এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন— যদি ডিজিটাল নামজারিও নিরাপদ না থাকে, তবে আইন ও প্রশাসনের ওপর আস্থা কোথায়?