ঢাকা | অক্টোবর ১৮, ২০২৪ - ১২:২৫ অপরাহ্ন

আবু সাঈদকে কটূক্তির মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

  • আপডেট: Monday, September 30, 2024 - 9:13 am
  • পঠিত হয়েছে: 26 বার

টাচ নিউজ: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে উপজেলার ভানুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী আব্দুল হাই শাফিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার আব্দুল হাই শাফি আক্কেলপুর উপজেলার ভানুরকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি আক্কেলপুরের গোপীনাথপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।

স্থানীয়রা জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে ভানুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে শাফি ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে কটূক্তি করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তারা বিচার চেয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই ঘটনার পর এলাকার শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে গা ঢাকা দেন তিনি।

পরে রোববার স্কুলে যোগ দিয়ে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন খবর পেয়ে ওইদিন সকাল থেকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা সেখানে অবস্থান নেন। ছাত্ররা তাকে আটকে রেখে খবর দিলে পুলিশ বিকেলে স্কুলে গিয়ে শাফিকে থানায় নেয়। এরপর বিএনপি নেতা জাকির হোসেনের মামলায় আব্দুল হাই সাফিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

এদিকে ২০১৮ সালে রায়কালী ইউনিয়নের কালাঞ্জ গ্রামে আব্দুল হান্নানের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং গত ৪ আগস্ট বিএনপি নেতা জাকির হোসেনের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে ৭৫ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়। আদালতের নির্দেশে আক্কেলপুর থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। ওই মামলায় ৩৯ নম্বর আসামি হিসেবে আব্দুল হাই শাফির নাম রয়েছে।

শাফির মা শাহিদা খাতুন বলেন, আমার ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরির কাজ করে। হঠাৎ পুলিশ স্কুলে এসে ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার ছেলে চোর-ডাকাত নয়। কেন ধরে নিয়ে গেল তাকে। থানায় গেলে পুলিশ বলছে, আমার ছেলের নামে মামলা আছে। আওয়ামী লীগ করে বলে তার বিরুদ্ধে শত্রুতা করে মিথ্যা মামলা দিছে। সরকার বলছে নাম থাকলেই ধরবে না, খোঁজ নিয়ে ধরতে বলছে। পুলিশ খোঁজ না নিয়ে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এখন আমার ছেলের সংসার চলবে কেমন করে।

শিক্ষার্থী রাহাদ হোসেন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাফি শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি রোববার স্কুলে আসায় আমরা থানায় খবর দেই। পরে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে গেছে।

ভানুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরিয়ম খাতুন বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর স্কুলের বাইরে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী শাফি মারধরের শিকার হয়েছিলেন। তবে কী কারণে তিনি মারধরের শিকার হয়েছিল তা জানি না। ওই ঘটনার পর আর তিনি স্কুলে আসেননি। এরপর রোববার এলে বিকেলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

আক্কেলপুর থানার ওসি নয়ন হোসেন বলেন, রংপুরে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি করেছিল শাফি। এ ঘটনায় ছাত্ররা তার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জানতে পারি শাফি স্বেচ্ছাসেবক লীগ হওয়ায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলেদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বও ছিল এবং তার নামে থানায় মামলা আছে। কিছুদিন পালিয়ে থাকার পর রোববার ভানুকান্দাতে স্কুলে এলে ছাত্ররা তাকে আটক করে। খবর পেয়ে আমরা তাকে থানায় নিয়ে আসি। তার নামে যে মামলা ছিল, ওই মামলাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শাফিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।