প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ বাতিলের পরামর্শ
টাচ নিউজ: প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেয়ার বিধানটি সংবিধান থেকে বাদ দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের মুখ্য পরিচালক ডা. মো আবদুল আলিম।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ’ শীর্ষক এক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশন ও ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শেষে দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ দেন ডা. মো আবদুল আলিম।
১) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ আন্তর্জাতিক নির্দেশক নীতিমালা অনুসারে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশন নিয়োগের নিশ্চয়তা দেয় না। অন্তর্বর্তী সরকারের দু’টি বিকল্প রয়েছে বিদ্যমান আইনটিকে পুনর্লিখন বা একটি নতুন আইন প্রণয়ন এবং বিদ্যমান আইনটি স্থগিত করা। যে বিকল্পই বেছে নেয়া হোক না কেন, আইনটিকে নিশ্চিত করতে হবে।
২) অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে হবে সরকারি এবং নাগরিক সমাজের মধ্য থেকে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় পেশাদারদের নিয়ে। কমিটি অবশ্যই স্বাধীন এবং যেকোনো ধরনের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো ধরনের প্রভাব থাকতে পারবে না।
৩) নিয়োগের মানদণ্ডগুলো পেশাদার, সৎ এবং নিরপেক্ষ লোকদের নিযুক্ত করার নিশ্চয়তা দেয়ার জন্য দৃঢ় হতে হবে। যোগ্যতার মানদণ্ডে পেশাদারিত্ব, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা, নৈতিক সততা, পূর্ববর্তী চাকরিতে বুদ্ধিবৃত্তিক সততা, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং দক্ষতা, চারিত্রিক স্বাধীনতা এবং শক্তি, সব নির্বাচনী অংশীজনের কাছে সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা এবং একটি বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান বজায় রাখার সংকল্প থাকা, অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। মানদণ্ডে কোনো সরকারের সুবিধাভোগীকে নিযুক্ত করা যাবে না, এ বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
৪) আইনে একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা এবং ব্যাপকভিত্তিক পরামর্শ গ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান, সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সব স্তরে নাম প্রকাশ এবং নাগরিকদের মতামত গ্রহণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপ, কর্মকাণ্ড, যোগাযোগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, আন্তরিক এবং সহজ-সরল হতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব তথ্য উল্লম্ব, আনুভূমিক এবং পাশাপাশি সব পর্যায়ে অবহিত করতে হবে।
৫) নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এমন একটি পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে, যা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও এক ধরনের সহমত নিশ্চিত করে।