পিতার যোগ্য উত্তরসূরি বারিস্টার নাজিয়া হাসেমকে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য মনোনয়নের দাবী
টাচ নিউজ ডেস্ক :ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজিকে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে মনোনয়ন দিতে কুমিল্লার সকল শ্রেণী-পেশার মানুষদের কাছ থেকে দাবি উঠেছে।
চিকিৎসাধীন বাবার অবর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ আসনে নৌকার পক্ষে তিনি সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজির পিতা সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট হাসেম খানের নামাজে জানাজাপূর্ব বক্তব্যে আইনজীবী নেতৃবৃন্দসহ কুমিল্লার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই দাবী তুলেন। ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পাচঁ দফা জানাজা শেষে অন্তিম শয়ানে শায়িত করা হয় এডভোকেট আবুল হাসেম খানকো। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জানুয়ারি বুধবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণসহ পাঁচ দফা জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ত্যাগী এ নেতার প্রতিটি জানাজায় মানুষ আবেগপ্রবণভাবে তার বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৫ সংসদীয় আসন থেকে পাচঁ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা এডভোকেট আবুল হাসেম খানকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। আব্দুল মতিন খসরুর রাজনৈতিক জীবন এডভোকেট আবুল হাসেম খান ছায়ার মতো পাশে ছিলেন। উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে দুই বছরের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সূযোগ পান এডভোকেট আবুল হাসেম খান।
গত ৭ জনুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কুমিল্লা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন এডভোকেট আবুল হাসেম খান। কিন্তু অসুস্থতা জনিত কারণে একদিনের জন্যও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি এডভোকেট হাসেম খান। তার অনুপস্থিতিতে আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ না থাকার ফলে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী হন।
এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পরে হওয়া উপ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজনের নাম প্রার্থী হিসেবে উচ্চারিত হলেও এডভোকেট আবুল হাসেম খানকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে চমক দেখান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সেই সময় এডভোকেট আবুল হাসেম খান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় কুমিল্লা-৫ আসনের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ও সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
পিতার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ও কার্যক্রমে ছায়ার মত পাশে থেকে বাবাকে সহযোগিতা করেছেন ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজি। তিনি ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম থেকে বার-এ্যাট ল ডিগ্রী অর্জন করেন। ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স সহ এমবিএ, এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন তানজি।
ব্যারিস্টার তানজির মাতা সৈয়দা সুলতানা আক্তার শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান। ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজির পিতা সংসদ সদস্য হিসেবে এডভোকেট আবুল হাসেম খানের ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যারিস্টার তানজি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পলিসি কমিটির সাথে সার্বিক সমন্বয়ে ভূমিকা রাখেন। তিনি কুমিল্লা-৫ তথা বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার সাধারণ জনগণ, অসহায় ও হতদরিদ্রদের বিনামূল্যে আইনি সহযোগিতা, করোনা মহামারি কালে অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে অবদান রেখেছেন ও রাখছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার পিতা আবুল হাসেম খানের নৌকার পক্ষে তিনি সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বাবার চিকিৎসায় সর্বাত্মক তদারকি করেছেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী এডভোকেট সৈয়দ আকবর হোসেন (বকুল মিয়া) ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজির নানা। তার নানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার একজন আইনজীবী ও তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের নির্বাচিত জিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার তানজির নানা এডভোকেট সৈয়দ আকবর হোসেন (বকুল মিয়া)। পার নানা একসময় বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ছিলেন।
ব্যারিস্টার তানজির স্বামী লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। ব্যারিস্টার তানজির শ্বশুর অনারারি ক্যাপ্টেন মোঃ নুরুল ইসলাম একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা রক্ষায় একজন জেসিও হিসেবে আস্থার সাথে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ এর মে মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
কুমিল্লা জেলা ও কুমিল্লা-৫ আসনের আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতৃত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল হাসেম খান এর যোগ্য উত্তরসূরী ব্যারিস্টার নাজিয়া হাসেম তানজিকে আসন্ন সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নে আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারকগণ মূল্যায়ন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা ও দাবী সংশ্লিষ্টদের।
এডভোকেট আবুল হাসেম খানের মৃত্যুতে তার নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লা-৫ বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তার সহকর্মী শুভাকাঙ্ক্ষী গন শোক প্রকাশ করছেন।