ভাষা শিখে কাজের ওপর দক্ষতার্জন করে ইতালির শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের যাওয়ার দ্বার উন্মোচন
টাচ নিউজ ডেস্ক:উরোপের গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইতালির শ্রমবাজারে বাংলাদেশীরা ইতালীয় ভাষা শিখে ও সুনির্দিষ্ট কাজের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়ার দ্বার উন্মোচন হলো।
প্রধান অতিথি ও ইতালীয় ডেলিকেট ভিনসেঞ্জো লুইজি খিরোল্লি জানান, ইতালিতে বর্তমানে ৫ লক্ষ শ্রমিকের শুন্যতা বিরাজমান। অবৈধ উপায়ে ইতালিতে প্রবেশ করছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিভাসী। কিন্তু তারা ভাষা ও কাজে অদক্ষ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। তাই ইতালীয়ান ভাষা শিক্ষা ও শ্রমবাজারের উপযোগী কাজের ওপর প্রশিক্ষণ নেয়া তরুনদের ইতালী শ্রমবাজারের যাওয়ার সূযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ইতালি ও বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের আলোকেই বাংলাদেশে অভিভাসন প্রত্যাশি তরুনদের কারিগরি ও ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট প্রদান করা হচ্ছে। ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিগগিরই সার্টিফিকেট প্রাপ্ত তরুনরা ইতালিতে সরাসরি কাজে যোগ দিতে সক্ষম হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের ইতালিতে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে প্রধান বাধা ভাষাগত অদক্ষতা। আমরা এর মানোন্নয়নে বাংলাদেশে ইতালীয়ান ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছি। ঢাকা, শরিয়তপুরের নড়য়ায়, গাজীপুর, ব্রাম্মণবাড়িয়াসহ মোট ১০ জায়গায় এখন ইতালীয়ান ভাষা শিখার জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে এটি দেশে আরো বিস্তৃত করা হবে। আগামীতে ইতালি অভিভাসন প্রত্যাশিরা নিজেদের প্রস্তুত করে সেখান যেতে পারবেন।
ইতালিতে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ইতালি। গত ৭ জুন ইতালির রাজধানী রোমে দেশটির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, দ্বিপক্ষীয় অভিবাসন ব্যবস্থার আওতায়; বিশেষ করে নির্মাণ, জাহাজ নির্মাণ ও পর্যটন খাতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিতে সম্মত হয়েছে ইতালি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব রিকার্ডো গুয়ারিগলিয়া আলোচনায় নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
রাজনৈতিক পরামর্শের আগে মাসুদ বিন মোমেন ও গুয়ারিগলিয়া বাংলাদেশ ও ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ইতালির পক্ষ এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে যে, বর্তমানে ফ্লুসি ডিক্রির অধীনে ৪৬ শতাংশেরও বেশি কর্মী মৌসুমি এবং অ-মৌসুমি কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে আসছেন।
বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, আইসিটি, কৃষি, অভিবাসন এবং গতিশীলতাসহ একাধিক ক্ষেত্রে সম্পর্ককে আরও গভীর করতে এবং আরও সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে।