ঢাকা | নভেম্বর ২২, ২০২৪ - ৪:১৫ পূর্বাহ্ন

বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে যুবদলের পদ বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

  • আপডেট: Sunday, February 26, 2023 - 2:38 pm
  • পঠিত হয়েছে: 128 বার

টাচ নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবগঠিত কমিটিতে সীমাহীন দুর্নীতি , পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে, নিষ্ক্রিয় অযোগ্যদের পদায়ন এবং ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন ও পদ বঞ্চিত করার প্রতিবাদে আজকেও বিক্ষোভ করেছে দলটির নেতা কর্মীরা।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আজ বেলা বারোটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। বিক্ষোভে তারা কমিটি বাতিলের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়। তারা কমিটিতে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসংগতি তুলে ধরে নিষ্ক্রিয় ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পদপ্রাপ্তদের পদ বাতিল করে ত্যাগী ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কর্মীদের মূল কমিটির অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য যে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই তারা নিয়মিত বিক্ষোভ মিছিল করে আসছে।এর আগেও পল্টন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছে পদ বঞ্চিতরা।কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায় তারা সেই ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত দলের ঘোষিত সকল কর্মসূচি নিয়মিতভাবে পালন করে আসছেন। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু দলের এমন দুঃসময়ে দলের সক্রিয় নেতা কর্মীদেরকে বাদ দিয়ে যারা টাকা দিয়েছে এবং অন্যান্য অনৈতিক সুবিধা দিয়েছে, বাসার বাজার করে দিয়েছে, কিংবা তাদের দোকানের কর্মচারী তাদেরকে পদ দিয়েছে। দলের এমন দুঃসময়ে যেখানে ত্যাগী, সাহসী ও যোগ্য কর্মীদের পদায়ন করা প্রয়োজন সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবেই দলটিকে দুর্বল করে দিয়েছে বলে সভাপতির দিকে অভিযোগ করছে নেতা কর্মীরা।

তাদের অভিযোগ সহ সভাপতি মাহবুবুল হাসান ভুইয়া পিংকু, ইমাম হোসেন, নুরুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ দিপু, মাসুমুল হক মাসুম দলের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। শুধুমাত্র অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তাদের পদায়ন করা হয়েছে।
প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ভাতিজা পিংকু ফরিদপুরে “মুজিব শতবর্ষে” সকল অনুষ্ঠানে স্পন্সর করে প্রধান অতিথি হিসেব অংশগ্রহন করার রেকর্ড রয়েছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান নিষ্ক্রিয়। সভাপতির কাছের লোক হিসেবে তাকে পদ দেয়া হয়েছে। সহ-সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মিশু বিগত আট বছর ধরে আমেরিকা প্রবাসী। তাকে অর্থের বিনিময়ে পদ দেয়া হয়েছে।
খনদকার মাহবুবুর রহমান মাহী সভাপতির ব্যাক্তিগত কাজের লোক। একারণে তাকে পদ দেয়া হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাহবুব ওরফে কসমেটিক্স মাহবুব কে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পদ দেয়া হয়েছে।
বিগত বিশ বছরের অধিক সময় ধরে রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকা তাজুল ইসলামকে পদ দেয়া হয়েছে।
তারা দাবী করেন ঘোষিত কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান কোনদিন কোন পর্যায়ে রাজনীতির সাথে জড়িত না থেকেও শুধুমাত্র আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে পদ প্রবাস থেকে এসেই পদ বাগিয়ে নিয়েছে।

সাসুজ্জোহা সুমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে ক্যাফে ক্যাম্পাস নামে রেস্টুরেন্টের মালিক। ব্যাবসার কাজে ১০ বছর যাবত দলীয় কর্মকাণ্ড করেন না। টুকু- মুন্নার কমিটির পর সক্রিয় হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যেখানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারেনা সেখানে সুমন ছাত্রলীগের সহযোগিতায় ব্যবসা করে আসছেন ১০ বছর ধরে। শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে তাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
কাতার প্রবাসী মামুন কে বিশাল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সহ -সম্পাদক করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জোবায়দুর রহমান জনি বিগত এক যুগ ধরে দলের কর্মকাণ্ডের সাথে নেই। তাকেও আর্থিক সুবিধার কারনে পদ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-আইন সম্পাদক তানভির হাসান সোহেল, জিল্লুর রহমানদের অতীতে কোন রাজনৈতিক পরিচয় ছিলনা। তাদের সরাসরি যুবদলে পদ দেয়া হয়েছে। অথচ বলা হয়ে থাকে যুবদল হচ্ছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ নেতাদের সংগঠন।
নাজমুল হুদা রাজু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাল্টিমুড গ্রুপের কর্মচারী, তাকেও পদ দেয়া হয়েছে। জোবায়দুর রহমান জনি, গত ১০ বছরে বিএনপি বা কোন অঙ্গসংগঠনের সাথে জড়িত নয়। আমানুল্লাহ বিপুল সভাপতির অর্থের যোগানদার হওয়ায় তাকে পদ দেয়া হয়েছে।
ইউনুস আলী রবি, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ- আইন সম্পাদক হয়েছেন। সে এখনও বরিশাল উত্তর জেলা ও মুলাদী উপজেলা বিএনপির সদস্য। তাকেও অর্থের বিনিময়ে পদ দেয়া হয়েছে।
দলের পদপ্রাপ্ত নিষ্ক্রিয় নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কামরুল হাসান তালুকদার – সহ- সাধারন সম্পাদক, খলিলুর রহমান, সহ- সাধারন সম্পাদক, এন এম আব্দুল্লাহ উজ্জ্বল, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, আইয়ুব খান, মুরাদ খান, শাখাওয়াত হোসেন চয়ন, মাইনুদ্দিন রুবেল, মিজানুর রহমান শিশির, জাহিদ হাসান, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, খন্দকার মাইনুদ্দিন খোকন, রফিক আহমেদ ডলার, রুহুল আমিন বাবলু, দুলাল হোসেন, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, মজিবুর রহমান সবুজ, সহ শতাধিক পদপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
সৈয়দ শহিদুল আলম টিটুকে সদস্য করা হয়েছে
আশির দশকে সভাপতি টুকুর সাথে ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য ছিল। সভাপতির বন্ধু, এই বিশেষ পরিচয়ে তাকেও পদ দেয়া হয়েছে। হুমায়ুন কবির শিপন নবগঠিত কমিটির সদস্য, অতীতে কোনদিন রাজনীতি করেনাই। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুন্নার বন্ধুর ভাই। একারনে তাকে সদস্য করা হয়েছে। মাসুদুল হক নামের পাবনার এক ইউনিয়ন যুবদল কর্মীকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে।
কামরুজ্জামান নান্নু, মোঃ জাহিদ হাসান নবগঠিত কমিটির সদস্য। অতীতে কোথাও কোন পদ ছিলনা। সভাপতির বাসার ব্যক্তিগত কাজে খাটে,তাদেরকেও পদ দেয়া হয়েছে।
প্রিন্স আহমেদ এমরান সেক্রেটারি মুন্নার আত্মীয়,বেয়াই পরিচয়ে তাকে সহ -সম্পাদক করা হয়েছে। সানোয়ার হোসেন একটি পেস্টিসাইড কোম্পানি বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে খামার বাড়ি এলাকায় চাকুরীরত।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বলেন অনৈতিক ভাবে পদায়ন করা এসকল অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের যুবদলের নতুন কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দলের দীর্ঘদিনের রাজপথের পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আজকের বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সাবেক যুবদল যুগ্ম সম্পাদক আলী আশরাফ, যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন, হাবিব হাসান রিন্টু, সহ -সাধারন সম্পাদক আবু সুফিয়ান দুলাল, আতিকুর রহমান আতিক, সামসুর রহমান, রফিকুল ইসলাম রতন, এডঃ মাহতাব আলম,আব্দুল মমিন সবুজ, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর তাহের বাবু, রিয়াদ হোসেন উজ্জ্বল। সাবেক সদস্য শাহজাহান কবির শাহীন।
ছাত্রদলের সাবেক সহ- সভাপতি তারেক উজ জামান, আশরাফুর রহমান বাবু, শোয়েব খন্দকার, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, হুমায়ুন কবির, সাজ্জাদ হোসেন উজ্জ্বল, জাকির হোসেন খান।
যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহাগ, এবিএম মহসিন বিশ্বাস, মাহবুব সিকদার। সাবেক সহ সাধারন সম্পাদক সুমন চৌধুরী, সহ -সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল হাসান হাওলাদার, খোরশেদ আলম, শহিদুল ইসলাম মাসুদ সরকার, সাবেক সহ -সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম মাসুম, রবিউল হাসান আরিফ, জিল্লুর রহমান কাজল, এডঃ মশিউর রহমান রিয়াদ, এডঃ সাইদুর রহমান মামুন।
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য নাজমুল হাই রায়হান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি রাশেদ খান, খন্দকার কাকন, এবাদুল হক পারভেজ সহ অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।